লক আউট ঘোষনা করা হলো পুতনি চা বাগান কে ।রাতের অন্ধকারে বাগান বন্ধের সূচনা দিয়ে বাগান ছেড়ে পালিয়ে গেলেন ম্যানেজার সহ অন্যান্য কর্মীরা। হাহাকার পরিস্থিতি শ্রমিকদের মধ্য। ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার পাথারকান্দির পুতনি চা বাগানে। হাজিরা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন সমস্যার কারনে শ্রমিকরা জড়ো হোন এবং ম্যানেজারের গাড়ি আটকে দাবি আদায়ের কথা বলতে বলতে বাক বিতন্ডা হয়৷ এক সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। শ্রমিকদের সাথে মিশে যায় অন্য এক পক্ষ এবং ম্যানেজার কে চরম অপদস্ত করার পাশাপাশি ঠেলাধাক্কা করে বলে অভিযোগ। যার ফলে এক সময় ম্যানেজার কে গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়। পরবর্তীতে পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষেন্দু পাল এই খবর পেয়ে সংগে সংগে পুতনি জিপি সভানেত্রী নমিতা চাষা গোয়ালা ও ভারতীয় মজদুর সংঘের কর্মকর্তাদের পাঠান তবে তাদের কথায় কর্নপাত করেননি বাগান পঞ্চায়েত সহ শ্রমিক সাজা দলটি এতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। এদিকে শ্রমিকদের যে মূল দাবি ছিলো তাই বলাই হয়নি। অন্যদিকে শুধু ম্যানেজার নয় সেখানে খবরের সন্ধ্যানে যাওয়া কর্মরত দুই সাংবাদিকেও চরম অপদস্ত করা হয়।এই গোটা ঘটনায় শ্রমিকরা পুরো নির্দোষ। শ্রমিকদের বিপথে পরিচালিত করেছে বাগান পঞ্চায়েত ও শ্রমিক সাজা এক পক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন যে সহজ সরল শ্রমিকদের কে ম্যানেজার ও সাংবাদিক অপদস্ত করার রনকৌশল রচেছিল এর পেছনে থাকা ব্যাক্তিদের কি শনাক্ত করতে পারবে প্রশাসন? এদিকে শ্রমিকদের অভিযোগ এতদিন হাজিরা রেশন ঠিকঠাক চললেও সোমবার বৃষ্টির কারনে শ্রমিকরা অর্ধেক দিন কাজ করলে বাগান কৃর্তৃপক্ষ তাদের হাজিরা কেটে দেয় এনিয়ে যাবতীয় সমস্যার সৃষ্টি। এছাড়া প্রত্যেক বাগানে হাজিরা বাড়লেও পুতনি চা বাগানে হাজিরা পুরো সপ্তাহ কাজ করলে ২১০ টাকা আর তার কম দিন কাজ করলে ১৮৩ টাকা করে দেওয়া হয় অতচ সরকারি নির্দেশ ২২৮ করে হাজিরা দিতে হবে শ্রমিকদের। এছাড়া শ্রমিকদের আরও অভিযোগ চা শ্রমিকদের পুকুর খনন করতেও অনুমতি নিতে লাগে। বেড়া দিতেও অনুমতি নিতে হয় এছাড়াও আরও বিভিন্ন সমস্যায় তারা জর্জরিত।এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বাগানের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে লক আউটের নোটিশ সেটে দেয় বাগান কৃর্তৃপক্ষ। তারা উল্লেখ করে বাগান ম্যানেজার প্রতিদিনের মত কাজের জায়গা পরিদর্শনে বের হোন। কাজের জায়গায় পৌঁছতেই অচেনা অজানা কিছু দুষ্কৃতী শ্রমিকদের সাথে মেশে আক্রমণের চেষ্টা করেন তাকে। তখন বাগান ম্যানেজার সেখান থেকে কোন মতে গা ঢাকা দিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচান। এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে সেখানে। তারপর বিষয়টি বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের দৃষ্টি গোচর হওয়ায় বিধায়ক তড়িঘড়ি সেখানে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তা, বাগান পঞ্চায়েত, জিপি সভানেত্রী ও অন্যান্যদের সেখানে পাঠান। তাঁরা উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ সময় শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্ত কোন সফলতা আসে নি। উল্টো তাদের উপর চড়াও হয় অজানা অচেনা দুষ্কৃতীরা। এই অজানা অচেনা লোকজন বাগানের শ্রমিক ও নন। এমতাবস্থায় বাগান কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে এই লক আউটের নোটিশ পাঠানো হয়েছে করিমগঞ্জ জেলাশাসক, করিমগঞ্জ পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত শ্রমিক কমিশনার কাছাড়, বিসিএসইউ সাধারণ সচিব, ওসি পাথারকান্দি, কমিশনার এটিইপিএফডি, সচিব ভারতীয় চা সংঘ, মুখ্য কার্যালয় কলকাতা, সহ অন্যান্য দের কে।আসলে ঘটনা নিয়ে কি বললেন বাগানের ম্যানেজার আসুন শুনে নেই… অন্যদিকে এই ঘটনার জন্য বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের কে গুন্ডাগিরি কে দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা হৃষিকেশ নন্দী। তিনি বলেন যদি সেদিন ম্যানেজার কে হুমকি, ঠেলা ধাক্কা সহ মারধরের চেষ্টা না করা হতো তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে গুন্ডাগিরির প্রয়োজন নেই৷। নীরিহ শ্রমিকদের মধ্য শ্রমিক সেজে ঢুকে এই ঘটনা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে যা দূর্ভাগ্যজনক, তিনি জেলাশাসক, বিধায়ক, মালিকপক্ষ, ম্যানেজার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যাতে অতিসত্তর বাগান চালু করে শ্রমিকদের এই সংকটের মুখ থেকে উদ্ধার করা হয়৷ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন একটাই প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকের কি হবে? এই সংকট থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন এরা? এক্ষেত্রে সবাই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের এই সংকট থেকে মুক্ত করুক এটাই চাইছেন সবাই। সঞ্জিত কৈরীর রিপোর্ট ।