রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের অবসরের পর পেনশন পেতে শুনেছেন, সরকার থেকে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ভাতা পেতে শুনেছেন, কিন্তু গাছকে কখনও অবসরের পর পেনশন পেতে শুনেছেন? শোনেননি তো। তাহলে শুনুন ভারতবর্ষের অন্যতম রাজ্য হরিয়ানাতে গাছের আয়ু ৭৫ বছর হলেই সেই গাছ প্রতি বছর ২ হাজার ৭৫০ টাকা করে পেনশন পায়। কি অবাক লাগছে তো শুনে? ভাবছেন নিশ্চয়ই গাছের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে নাকি? আছে আছে সবই আছে। আমাদের হরিয়ানাতে গাছও হল সরকারি কর্মচারী। ২০২৩ সালে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওই রাজ্যের গাছেদের পেনশন দেওয়ার এই প্রকল্পটি চালু করেন। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় প্রাণবায়ু দেবতা পেনশন স্কিম। আমাদের ভারতবর্ষের এটাই প্রথম কোনও রাজ্য যেখানে গাছ বাঁচানোর জন্য এই প্রকল্পটি চালু হয়েছে। কিন্তু কেন দেওয়া হয় গাছের পেনশন? কী ভাবেই বা গাছেরা
এই রাজ্যের গাছ গুলো ও পেনসন পায়! কারণ জানলে চমকে উঠবেন।The trees in this state receive pensions too! You’ll be amazed when you learn the reason.
পেনশন পায়? কোন কোন গাছ এই পেনশন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত? আসুন আজকের এই প্রতিবেদনে সবকিছু জেনে নেই, গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বজুড়ে একটাই স্লোগান, কিন্তু আমরা গাছ বাঁচাতে আর পারছি কই বলুন? আমরা যত উন্নত হচ্ছি যত প্রযুক্তি বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার করছে তত যেন একটু একটু করে ধংসের মুখে তলিয়ে যাচ্ছে আমাদের পরিবেশ। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে বাড়ছে গরম দেখা দিচ্ছে অক্সিজেনের ঘাটতি তাই গাছ কাটার এই ধ্বংসলীলায় রাশ টানতেই এই প্রকল্পের ভাবনা শুরু৷ যে প্রকল্পে বাড়ির যে গাছগুলির বয়স ৭৫ বছর বা তারও বেশি সেই গাছগুলোকে যত্ন নেওয়ার জন্য সরকার থেকে গাছের মালিককে বছরে ২ হাজার ৭৫০ টাকা করে দেওয়া হবে৷ লক্ষ্য করে দেখা গেছে, এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর মানুষের মধ্যে গাছ বাঁচানোর প্রবণতাও বেশ খানিকটা বেড়ে গেছে। কারণ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যদি একটি গাছকে ঠিকঠাক ভাবে যত্ন নেওয়া হয় তাহলে প্রতি বছর সেই গাছের মালিকের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ২ হাজার ৭৫০ টাকা যা ওই গাছটি দেখভালের জন্য বরাদ্দ। এই পেনশন প্রকল্পের আওতায় যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো হল পিপ্ল, বট, নিম, আম জাম, গোলার, কৃষ্ণ কদম্বো এবং পিলখানার মতো প্রায় চল্লিশটি প্রজাতির গাছ৷ আর এই প্রকল্পের মাধ্যমে হরিয়ানা সরকার রাজ্যবাসীকে বেশি বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। হরিয়ানার আজ যদি কারও বাগান বা খামারে এমন কোনও গাছ থাকে যাঁর বয়স ৭৫ বছরের বেশি, তাহলে সেই ব্যক্তি অবিলম্বে বনদপ্তরের কাছে গিয়ে প্রকল্পটির জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। তবে ভাববেন না সেই আবেদন জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছের পেনশন শুরু হয়ে যাবে। মানুষের মতোই অবসরপ্রাপ্তের কাগজপত্র তৈরি হতে গাছেরও একটু সময় তো লাগবেই। তাই গাছের পেনশনের জন্য আবেদন করলে সেই গাছটিকে একদিন খতিয়ে দেখতে আসেন সরকারি আধিকারিকেরা তারপরেই নাকি স্থির হয় সেই গাছ আদৌ পেনশন পাওয়ার যোগ্য কিনা। আর এভাবেই এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৮ শো ১০ টি গাছ ওই রাজ্যে পেনশন পাচ্ছে৷ তাই আজ হরিয়ানা রাজ্যের মানুষেরা নিজের যত্নে বড় করে তোলা গাছ কাটতে গিয়েও দুবার ভাবেন। আসলে গাছ বাঁচানোর এই লড়াইটা আমাদের সবার। প্রতি বছর গরম পড়লেই আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। শুধুমাত্র প্রবল গরমেই গাছ লাগানোর কথা চিন্তা না করে আমরা যদি সারা বছরই নিজের চারপাশটা গাছপালার ঘিরে রাখি তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও আমরা পরিবেশকে বাঁচাতে পারব। ব্যুরো রিপোর্ট নিউজ অবিকল।