পূজোর চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ত্রিপুরার কদমতলায়। প্রথমে মুসলিম সম্প্রদায়ের যাত্রীবাহী গাড়ি আটকে চাঁদা আদায় ও মারধরের অভিযোগ কদমতলার ইন্ডিয়ান ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরে এই ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়ে গোটা
কদমতলা সহ পাশ্ববর্তী এলাকা সহ করিমগঞ্জ জেলার দুবাগ ও কাঠালতলীতে । উত্তেজিত মুসলিম জনতা নিরীহ হিন্দু মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাটে নির্বিচারে ভাঙচুর চালায়। কদমতলা পুলিশ একাধিকবার মৃদু লাঠি চার্জ করে পরিবেশ কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করলেও প্রতিবারেই উত্তর ত্রিপুরার পুলিশ সুপার ভানুপদ
চক্রবর্তীর নেতৃত্বে থাকা পুলিশের ব্যার্থতা সামনে আসে। ব্যার্থতা ঢাকতে পূজোর মরশুমে জারি করে ১৬৩ বিএনএস কার্ফু। মোতায়েন করে বিশাল পুলিশ টিএসআর ও আধাসামরিক বাহিনী। জানা যায়, রবিবার দুপুর নাগাদ কদমতলা থানাধীন লালছড়া ইছাইরপাড় এলাকার বাসিন্দা জহর মিয়া তার নিকট আত্মীয়দের নিয়ে গাড়ি করে চিকিৎসার জন্য
উতপ্ত কদমতলা,চাঁদা আদায় কে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে।In Kadamtala, communal clashes erupted between two communities centered around the collection of a local tax.
বাজারীছড়া এলাকার মাকুন্দা হাসপাতালে যাচ্ছিল।তখন কদমতলা হাপাইটিলা এলাকা সংলগ্ন ইন্ডিয়ান ক্লাবের সদস্যরা দূর্গা পূজার চাঁদার জন্য তাদের ওয়াগনার গাড়িটি দাঁড় করিয়ে চাঁদা দাবি করে। তখন চালকের আসনে বসে থাকা জহর মিয়া বলে হাসপাতাল থেকে আসার পথে দিয়ে যাবো।তখন ক্লাব সদস্যরা চাঁদা দিয়ে যেতে হবে জহর মিয়াকে মারধর করে বলে
অভিযোগ।সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা কদমতলা থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানান। পরে উত্তেজিত জনতা মুহুর্তে বাজার দখল নিলে বাজার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ দোকানপাট বন্ধ করে যে যার মতো
পালিয়ে যায়। সাথে চাঁদার জুলুম বাজিতে আক্রান্ত ভিন ধর্মী যুবক কদমতলা থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়।সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এরই মধ্য কিছু অতিউৎসাহী মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কদমতলা বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালায়।চালানো হয় কদমতলা বাজার এলাকার একাধিক বাড়িতে হামলা।ভাঙচুর করা হয় বাড়ি ও গাড়ি। মারধর করা হয় হিন্দু মহিলাদের। মুহুর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেরেমিয়া ডার্লং। এদিকে কদমতলা থানার ওসি জয়ন্ত
দেবনাথ পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠি চার্জ করেন।গোটা দিনভর কদমতলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। পূজোর মৌসুমের বাজার মুহূর্তে জন শূন্যে পরিণত হয়।মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ,টিএসআর ও আধাসামরিক বাহিনী। পরবর্তীতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ চলে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ ঝড়ো হতে থাকে। সন্ধ্যার পর পুলিশের পূনরায় লাঠি চার্জে কয়েকজন নিরীহ দোকানি আঘাতপ্রাপ্ত হন। এদিকে রাত আটটা পর্যন্ত কদমতলা থানায় বসে থাকেন পুলিশ সুপার।তবে এদিন পুলিশ সুপারের ভূমিকায় সন্তোষ্ট হননি কেউই। যদিও পুলিশ সুপারের তুলনায় কদমতলা থানার ওসি জয়ন্ত দেবনাথের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। অবশেষে আইনশৃঙ্খলার কথা ভেবে সন্ধ্যা সোয়া সাতটা
নাগাদ জেলা পুলিশ প্রশাসনের তরফে কদমতলা-কুর্তি বিধানসভা এলাকা জুড়ে ১৬৩ বিএনএস কার্ফু জারি করা হয়। সংবাদ লেখা পর্যন্ত থমথমে পরিস্থিতি গোটা বিধানসভা জুড়ে।তবে পুলিশ সুপার যদি সঠিক সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতো তাহলে হয়তো আজকের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন৷ব্যুরো রিপোর্ট নিউজ অবিকল।