অবশেষে গো-মস্তক কান্ডে ধৃত এক ভিন্ ধর্মী যুবক।হিন্দু বাড়ির রাস্তায় গো-মস্তক রাখা কান্ডে জড়িত মূল অভিযুক্তকে অবশেষে জালে তুললো চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ। ধৃত যুবকের নাম রাজু মিয়া।এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল গত রবিবার অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের রাতে উত্তর ত্রিপুরা জেলার চুরাইবাড়ি থানা এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, এদিন রাত আনুমানিক সোয়া আটটার দিকে চুরাইবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নং ওয়ার্ডের কালাচাঁদ পাড়ার বাসিন্দা দেবু দেবের বাড়ির রাস্তায় গো-মস্তক দেখতে পায় তার মেয়ে পঞ্চমী দেব।তখন বিষয়টি বাড়ির অন্যান্যদের জানালে খবর দেওয়া হয় চুরাইবাড়ি থানায়।খবর পেয়ে থানার ওসি সমরেশ দাস দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ছুটে আসেন ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা।ততক্ষণে লোকজ জড়ে হয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।কয়েক শতাধিক জনতা জয় শ্রীরাম বলে ধ্বনি দিতে থাকে এবং এই ঘটনাকারীকে চিহ্নিত করে কঠোর আইনী শাস্তির দাবি জানান।কিন্তু উত্তেজিত জনতার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। উত্তেজিত জনতার দাবি দুদিন পূর্বে মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদ উৎসব সম্পন্ন হয়েছে,আর এই উৎসবের জানান দিতে হয়তোবা কেউ এই কান্ড ঘটিয়েছে। তাছাড়াও আসন্ন লোকসভা নির্বাচন একেবারে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে,এর মধ্যে ধর্মীয় সুরসুরি দিতে সুযোগসন্ধানীদের রাজনৈতিক ইন্ধনও থাকতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান। এদিকে এদিন রাতেই বাড়ি মালিক দেবু দেব চুরাইবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতে ঘটনাস্থলে বিশাল টিএসআর ও বিএসএফ বাহিনী মোতায়ন রাখা হয়।অপরদিকে সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী সহ ফরেন্সিক টিম ও পশু চিকিৎসক।তারা সরজমিনে গো মস্তক টি পত্যক্ষ করার পর পুলিশ গো মস্তক টি সিজ করে ফরেন্সিক টেস্টের জন্য নিয়ে যায়।সাথে স্হানীয় থানার পুলিশ ২০ নম্বরের ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৪৮/১২০ বি/২৯৫এ ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে।এই মামলার তদন্তকারী অফিসার সাব ইন্সপেক্টর প্রদীপ বর্মন তদন্তে নেমে ঘটনার প্রায় সাতাশ ঘন্টার ভিতর এই কান্ডের মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেন। সোমবার রাত পৌনে এগারটা নাগাদ বাঘন স্কুল সংলগ্ন এলাকার জসিম উদ্দিন চৌধুরীর ভাড়া ঘর থেকে রাজু মিয়া(২৮,পিতা রহিম মিয়া)নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।তার বাড়ি শিপাহীজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জ এলাকায়।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,সে দীর্ঘদিন যাবৎ কদমতলা ব্লক এলাকায় ভাঙচুরা লোহার ফেরীর কাজ করতো। এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এদিন রাত দুটো নাগাদ ধৃত যুবককে ধর্মনগর থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাতভর ধৃতকে ধর্মনগর থানার হেফাজতে রেখে জোর জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। মঙ্গলবার পুলিশি রিমান্ড চেয়ে ধর্মনগর জেলা ও দায়রা আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।তবে কি কারন,কি উদ্দেশ্য সে এই কান্ড ঘটিয়েছে তা এখনো স্পষ্টভাবে বলতে চাইছে না পুলিশ। গোটা ঘটনায় এক রহস্যের বাতাবরণ ঘুরপাক খাচ্ছে।